স্ট্রেস বাড়ছে, সমাধান কী!
মানসিক চাপ জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানসিক চাপ থাকবেই। আমাদের লক্ষ্য হবে মানসিক চাপ কমিয়ে বা চাপমুক্ত হয়ে জীবন চলার পথে অগ্রসর হওয়া। চুইংগাম চিবালে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা দুটোই কমে। এর কারণ চুইংগাম চিবানোর সময় ব্রেনে রক্ত চলাচল ঠিকভাবে হয়। অনেকস সময় ঘরের বাহিরে সময় কাটানোর ফলে মানসিক চাপ কমে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় ঘরের কাছে হলেও কয়েক মিনিট বাহিরে সময় কাটিয়ে আসলে মানসিক চাপ কমবে এবং আপনি সতেজ ও চাঙ্গা অনুভব করবেন।
অতিরিক্ত চাপে যা ঘটে
অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে অতিরিক্ত অ্যাড্রেনালিন ও কর্টিসল নিঃসরণ, হূদস্পন্দন বৃদ্ধি, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, মাংসপেশিতে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হওয়া, পাকস্থলীর অসুখ, অহেতুক শক্তি প্রয়োগের প্রবণতা বাড়া, এমনকি জন্মদান ক্ষমতা পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এসবের প্রতিক্রিয়ায় অনিয়মিত হূদস্পন্দন হয়, হার্ট ফেইলিওর, হার্ট অ্যাটাক, পাকস্থলীর আলসার বা পেটের পীড়া ইত্যাদি অসুখ হতে পারে।
কমানোর উপায়
মন খুলে হাসুন। প্রকৃত হাসি আপনার মানসিক চাপ কমায়। তাই যতদূর সম্ভব আমাদের হাসিমুখে থাকা উচিত। ল্যাভেন্ডার সৌরভ যেমন ল্যাভেন্ডার এয়ার ফ্রেশনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত একটি গান শুনুন। গান মানসিক চাপ কমায়। গান ব্রেনে ডোপামিন নামে একটি রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে থাকে, যা আপনার মুডকে উজ্জীবিত করে এবং মানসিক চাপ কমিয়ে দেয়।
জোরে জোরে দম নিন
যখন কোনো কিছু নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন থাকেন বা আকস্মিক কোনো বিপদের মুখে পড়েন, তখন দীর্ঘশ্বাস নিন। কিছুক্ষণ ধরে রেখে ছেড়ে দিয়ে আবার দীর্ঘশ্বাস নিন। এভাবে কয়েক মিনিট পর আবার করুন। এতে শরীর ও মস্তিষ্কের কোষগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায়, হূদস্পন্দন স্বাভাবিক হয়ে আসে, মানসিক চাপও কমে যায়।
অতিরিক্ত চর্বি ও তেলযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন
অতিরিক্ত তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো হজম হতেও সময় লাগে। অনেক অসুখ-বিসুখের কারণও এসব খাবার। এসবের পরিবর্তে সবুজ শাকসবজি, বাদাম, ননিবিহীন দুধ ইত্যাদি খান। এগুলোতে থাকা ভিটামিন ই, বি, ম্যাগনেসিয়াম ও জিংক মস্তিষ্ক চাঙ্গা রাখতে সহায়তা করে।
পায়ের পাতার ব্যায়াম
এটা মানসিক চাপ কমানোর প্রাচীন ও কার্যকর একটি পদ্ধতি। পায়ের পাতার নিচে ছোট এক টুকরা কাঠির মতো কিছু রেখে দিন। পাঁচ মিনিট ওটাকে রোল করে সামনে-পিছে নিন। এতে মস্তিষ্কে এন্ডোরফিনস নামের হরমোন নিঃসরণ হওয়ায় চাপ কমায়।
সামাজিক বন্ধন এবং বন্ধুত্ব
সামাজিক বন্ধন এবং বন্ধুত্ব মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। আপনার কোনো ভালো বন্ধু থাকলে বা আপনজন কাউকে আপনার সমস্যার কথা খুলে বলুন, দেখবেন মানসিক চাপ ধীরে ধীরে কমে যাবে।
লেখক: ডা. মো. নুরুজ্জামান, সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ। এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ, দিনাজপুর।
What's Your Reaction?