অপহরণ-ধর্ষণের অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা
অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গাজী এজাজ আহমেদ এবং তার চাচাতো ভাই স্থানীয় রুদাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ১০-১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে।
বুধবার দুপুরে ভিকটিমের খালাতো ভাই গোলাম রসুল বাদী হয়ে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা দায়ের করেন।
এজাহারভুক্ত অন্য পাঁচ আসামি হলেন- গাজী আব্দুল হক, আলামীন গাজী, আক্তারুল আলম সুমন, সাদ্দম গাজী ও মো. ইমরান হোসেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম আদালতে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার সময় ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গাজী এজাজ আহমেদ শাহপুর বাজারে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার পর ওই রাতেই ভিকটিম খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বাদী গত ২৮ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসির সামনে গিয়ে জানতে পারেন ওসিসি কর্তৃপক্ষ উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ ও তার চাচাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভিকটিমকে যথাযথ চিকিৎসা প্রদান না করে ছাড়পত্র প্রদান করার উদ্যোগ নিয়েছে।
এরপর ওসিসি থেকে বের হওয়ামাত্র ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে এজাহারভুক্ত আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জন আসামি ভিকটিম ও তার মাকে জোরপূর্বক টেনেহিঁচড়ে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মোটরসাইকেলসহ গাজী তৌহিদুজ্জামানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে গভীর রাতে অজ্ঞাতনামা ২-৩ জন আসামি ভিকটিম ও তার মাকে খুন-জখম করার হুমকি দিয়ে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে পুলিশের কাছে মিথ্যা বক্তব্য প্রদানে বাধ্য করে। পরে পুলিশকে ম্যানেজ করে গাজী তৌহিদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ ও তার চাচাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদ ভিকটিমকে ডুমুরিয়া থানা এলাকার অজ্ঞাত একটি স্থানে আটক রাখে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, বাদী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি। পক্ষান্তরে আসামিরা অত্যন্ত অর্থ ও পেশিশক্তির অধিকারী, নারী নির্যাতনকারী, অবৈধ ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারকারী, আইন অমান্যকারী। তারা ভিকটিমকে নানাভাবে হুমকি প্রদান করে আসছিল। তারপরও বাদী, ভিকটিমকে উদ্ধার করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে ট্রাইব্যুনালে এসে মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়।
মামলায় আরও বলা হয়, ওই দিন ছাড়াও ভিকটিমকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে।
খুলনা ব্যুরো
What's Your Reaction?